কলেজের প্রতিষ্ঠাতা

এস.এম.আসাদুল্লাহ্রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ-মচমইল হাই স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক পশ্চিম বাগমারার নারী শিক্ষার অগ্রদূত জনাব এস.এম.আসাদুল্লাহ্ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহায়তায় ১৯৯৫ সালে সৈয়দপুর-মচমইল মহিলা ডিগ্রি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ১৯৪২ সালের ০৭ ফেব্রুয়ারী বাগমারা উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের বইকুরি গ্রামে জন্মগ্রহন করেন । তাঁর পিতা-রহিমুদ্দিন সরদার, মাতা-খুকুমনি। ছয় ভাই এক বোনের সবার ছোট ছিলেন তিনি। দুই বছর বয়সে তিনি মাকে হারান। মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত আসাদুল্লাহ্ বড় ভাই ও ভাবীদের তত্ত্বাবধানে বড় হন। তাঁর শিক্ষাজীবন শুরু হয় মচমইল প্রাইমারী স্কুলে। এরপর তিনি ভর্তি হন দূর্গাপুর উপজেলার দাউকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে তিনি বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক ভোলানাথ স্যান্যাল এর তত্ত্বাবধানে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিক পাস করেন। এরপর রাজশাহী কলেজ থেকে ১৯৬০ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন শাস্ত্রে অনার্সসহ এম এ পাশ করেন। ১৯৬৩ সালে অনার্স পরীক্ষা শেষ করে তিনি নিজ এলাকায় হাই স্কুল প্রতিষ্ঠার কাজে হাত দেন। এ কাজে তিনি লক্ষ্য করেন হাতে গোনা কিছু ছাত্রী প্রাথমিক পর্যন্ত লেখাপড়া করলেও প্রাথমিক শেষে কেউ ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হচ্ছেনা। বিষয়টি তাঁকে চিন্তিত করে তোলে। এরপর বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে তিনি পার্শ্ববর্তী কোন্দা গ্রামের “আমেনা ” নামে এক ছাত্রীকে বাড়ি থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় আনা-নেয়ার ব্যবস্থা করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির মাধ্যমে এ এলাকার নারীদের উচ্চ শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত করেন। পরবর্তীতে ১৯৯৫ সালে ১৭ জন ছাত্রী নিয়ে সৈয়দপুর-মচমইল মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত এই কলেজটি পরবর্তীতে ডিগ্রি স্তরে উন্নীত হয়। তিনি মচমইল হাই স্কুল, সৈয়দপুর-মচমইল মহিলা ডিগ্রি কলেজ ছাড়াও নিজ গ্রাম বইকুরীতে একটি প্রাইমারী স্কুল, ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেন। এলাকার এতিম শিশুদের জন্য তাঁর প্রতিষ্ঠিত মচমইল এতিম খানা থেকে অনেক এতিম ছেলে লেখাপড়া করে জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। একসময়ের শিক্ষার আলো বঞ্চিত পশ্চিম বাগমারার শিক্ষার আলোকবর্তি প্রজ্জ্বলনকরী এবং নারী শিক্ষার অগ্রদূত মহান এই শিক্ষক ২০১৫ সালে ২৬ মে বার্ধক্য জনিত কারণে নিজ গ্রাম বইকুরীতে মৃত্যুবরণ করেন।

এস.এম.আসাদুল্লাহ্